কবিতা 

তাঁতার দস্যুর দল ।। সোহরাব ইফরান

(ক)

‘কবিবর মান্য হলা যবে আপন পিতার করোটিতে মদ্যপান করি’—হিজল জোবায়ের আধুনিক/ উত্তরাধুনিক ভাষাজ্ঞান এর সাথে পরিচিত হয়েছিলাম কাগজে যার কবিতা পড়ে, তিনি হিজল, কিংবা পদার্থ নদী বল বেয়ারিং। চরাচর ব্যাপ্তির দিনে তরুন কবিদের সাথে হিজল জোবায়ের এর এভাবেই সাক্ষাৎ ঘটে।

“no distance can weigh you down, you come flying, facinatel, and at last lasting for light, poor moth, you perish in the flame.”

“একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে

দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে

পুনরায় ডুবে গেলো- এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে

বেদনায় গাঢ় রসে আপক্ক রক্তিম হলো ফল।”

—ফিরে এসো চাকা

যখন এ লেখা আড়ম্ব করি তখন, মহালয়ার বাকি আছে আরো প্রায় তিন মাস। মনে হলো তখন এই কবিতাখানির পাপেটিং শো টা দেখার ইচ্ছা হতে পারে। যদি আমরা কোন ভাবে চিন্তা করতে সক্ষম হতে পারি, যে বাংলা বর্ণমালা সহযোগে এখানে একটি ‘প্রতিমা বিসর্জনের’ রূপায়ণ লুকিয়ে আছে। উৎসবের কোন উপকরণ-ই কমতি নাই এই কবিতায়। এটা এতকাল অনেকে পড়েছেন বুদ্ধিদীপ্ত বিষাদের প্রেম নিয়ে। কিন্তু এর মধ্যে যে উৎসব লুকিয়ে আছে তা হয়তো অলক্ষেই থেকে গিয়েছে অনেকের। মিররিং করাটা কতটুকু দূর থেকে দেখতে হবে, তা সম্ভবত বিনিয় মুজুমদারের গানিতিক প্রীতির কথা মনে করিয়ে দেয়। শুধুই তো প্রতিমা গায়ত্রি চক্রবর্তী কে বিসর্জন না। কবি চেয়েছেন আরও বেশি কিছু। যতটা চায়নি বালিকা। তিনি চেয়েছেন উত্তান হোক গায়ত্রির, অন্য কোথাও, অন্য ভাবে। তাই ফিরে এসো চাকা এক পৃষ্টার একটা চিঠি না হয়ে, সিক্সটি আপ ভাইব্রেশন ক্রিয়েট করছে। যেটা নতুন করে বাংলা ভাষা পড়ার প্রয়োজনীয়তা তৈরি করে। কারণ কয়েকটি, ১। লোকায়তিক, ২। গানিতিক, ৩। লোকায়তিক ধারণা অস্বীকার, ৪। নতুনভাবে জন্মানো আমাদের চোখে, একটি প্রনালী হিসেবে উপস্থাপন করাটা।

-বাতিল করতে পারাটা সহজ। কিন্তু কেন ধরব, তার জন্য যুক্তি থাকা চাই। ফিরে এসো চাকা নিয়ে ন্যাচারাল সিলেকশনও বেশি৷ আর সে কারণে নিপুণা চিত্রকল্প নিয়ে গভীর দৃশ্যটা চোখ এড়াতে পারে।

এই মুহুর্তে নিশ্চয় আপনার মনে পড়ছে, প্রতিমা বিসর্জ্জন, সেখানে আপনি কোথায়? নৌকায়, নদীতে, নাকি নদীর পাড়ে অনেকের ভিড়েও একান্ত একাই দেখার। সাধারণত প্রতিমা একটা হলেও তার লক্ষাধিক ভক্তরা কিন্তু প্রতিমার সাথে নিজেকে বিসর্জ্জন দিয়ে থাকে। এবং পরের মুহুর্তে নতুন করে নিজেকে ভাবে। ব্যপারটা ন্যাচারালাইজড নাগরিক হিসেবে দেখার অনুমতি তো আছেই। পুরুনো স্মৃতি থেকে অনুভূতি কে ফ্রেশার কর‍তে গিয়ে এই কবিতায় শেষের পঙতি তে একটা রেস পাওয়া যায়। যেখানে ইমাজিনেশন টিকিয়ে রাখা কঠিন দুর্বল মস্তিষ্কের পক্ষে। বৃথা বাক্যব্যয় না করে, আপনার ধারণা মতো কবিতাটা কেটে দেখুন। গতানুগতিক বিনয় মজুমদার কে নিয়ে লেখা থেকে— নিজেকে সম্পূর্ণ ভাবে পৃথককরণ করতে পারেন কি না, করাটা দরকারি।

 

(খ)

চেখব এর নাটক এ সাধারণ সংলাপের পূর্বে কখনো কখনো জায়গান্টিক রিদমের সংলাপ ব্যবহার করতে দেখা গেছে। যেমন অপেক্ষাকৃত ও অনগ্রসর একজন’কে অপেক্ষা বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন, ”জানেন তো, হেরাগুহা পর্বত দোয়ারে যদি মোহাম্মদ (সাঃ) না যেতেন, তবে হেরাগুহা পর্বতই যে মোহাম্মদ (সাঃ) এর নিকটে চলে আসতো! ”এ ধরনের জায়গান্টিক রিদম সংলাপে তখনই আসে যখন, কয়েকটি সংবেদনশীল মননে কথায় তাৎক্ষণিক বিমূর্তায়ন এর সম্ভাবনা দেখা দেয়। এমন সংলাপ অন্তসারশূন্যতা যখন তৈরি হতে পারে, যখন শিল্পীর বিমূর্ত রূপের সাক্ষাত ঘটে। ঘটে যাওয়া শিল্পীদের আত্বহত্যা বিষয়ক কলঙ্কতিলক জন্মায় মূলত জীবন ও কবিতায় সময়োপোযগী বিমূর্ত তৈরি না করতে পারা। কিংবা বিমূর্তের প্রকট উপস্থিতি বর্ণনা করতে না পারা। যে কোন বিমূর্ততায় জড়ানোর পূর্বে জানা দরকারী! এই বিমূর্ত আপনার জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ? কখন এর প্রয়োজন আপনার হলো? এক্সেক্ট আর্ট যখন তখন নিরাপত্তা দেয় হয়তো। বিমূর্ত কিন্তু তা করবে না। কাজেই খুনোখুনিটা হয়, হয়ে থাকে। ল্যব-রেষ্ট কি এটা স্ব-কংকাল বুঝে নিতে পারে। কিন্তু আপনি কি বুঝতে পারেন, দালির চামচগুলো এমন ভ্রাম্যমান কেন! যদি পথচারী হিসাবে কিছু পথচারীদের অনুভব করতে পারেন, ইলেক্ট্রিক থামের মতো ঝিমধরা একটা তরঙ্গ দেহে বয়ে চলেছে। তাদের জিজ্ঞেস করতে পারেন, ‘কি করছেন তাঁরা’? ট্রমা ও স্ট্রেস বিষয়ক সংলাপ আপনি শুনবেন। কাজেই চেখব এর নাটকে বিমূর্তরাও ছিল। কিন্তু চেখবের সংলাপ বলে দেয়, তার সংলাপে সে নিজে তুষ্ট মোটেই ছিল না। ”if Mohammad Didn’t go to heraguha then heraguha must come to Mohammad.” লক্ষ্য করুন চরিত্রের অসহনীয় লগুতা এখানে নেই, এখানে স্পষ্টই ছিল সমাজে বিমূর্ত কলা যে অপরিচিত ও অপরিহার্য সেটা জনমনে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, কিন্তু উদ্ভাসিত নয়। কবি কে ঠিক ততটাই বিশৃঙ্খল ও বাস্তব জীবনে অগ্রসর হয়ে থাকতে হয়। কারণ আপনি জানেন না আপনার জীবনে কখন বিমূর্ত সময় উপস্থিত হতে পারে। ব্যক্তি প্রয়োজন কে ঘিরে সাহিত্য(*abstract) যতটা নয়, সামাজিক প্রয়োজনে বিমূর্ত দরকার বেশি। ফার বেটার শিল্পী ও শিল্পী পরিবারে সুইসাইড আরও গ্রেট হর্ণ দিলে পরে, বিমূর্ত কলা নিয়ে অজ্ঞানতা ও জানাশোনার দারুণ প্রয়োজন অনুভূত হতে পারে। সঠিক বিমূর্ত চিহ্নিতকরণ না করতে পারাটা অনেকের সুইসাইড করার সুযোগ করে দেয়। আধুনিক সাহিত্যের পাঠক হতে হলে খুব সাধারণ বিমূর্ত আপনাকে ভাবায়, এটা জানি। abstraction demund itself huge cost from every corner. আর যেহেতু সকল বিমূর্ত কলার গুরু হচ্ছে কবিতা।

 

(গ)

“অন্তর্গত পাপ আপনাকে বিনয়ী করে তুলবে’—দুখাই রাজ।”

আভিধানিক বিনয়’ কাব্যিক বিনয়ের পার্থক্যটা যারা ডিফার করতে চায়। ‘অন্তর্গত পাপ’, অস্তগামী শার্ল বোদলেয়ার, কিন্তু; উজ্জিবীত বোদ ল্যারের মুখোমুখি নয়। সোজা হৃদয়ের হন্টন দুরত্ব পায়ে না মানলে ডানে-বায়ে যেতে চায়। এমন ঊর্ণাজালের মোটরকার রুপোশিদের মরে যেতে দেখেছে(!আদৌ কি, তাদেরই), লাবন্য দেখেছে যে কবি, সে মিশে যেতে দেখেছেন কীসের নম্রতা সহকারে মূলত? তাকে আমি এই জন্য বলেছি, জীবনানন্দ দাশ বিবাগী মটর কার চড়লেও, কবিতায় বিবাগী না। প্রচুর নৈতিক জমায়েতের ফলে তার কিমাকার ডায়নামো বিপুল চার্জসহ দৃশ্যমান। ঘোড়ারা আদতে বিমূঢ় দেখায়।কিন্তু প্রিয়াম ততক্ষন পর্যন্ত আগুনের উচ্ছতা পেতে পারে না, যতক্ষন না ঘোড়ায় চরে। অস্তগামী বোদলেয়ারের জন্ম ডাউস নক্ষত্র বোদলেয়ারের আস্তাবলের র‍্যাবো’টি। বোদলেয়ারেরা একটা এমন নক্ষত্র আছে বলে জানতো যাকে তুলনা করা হতো কালো একটা সূর্যসম, বিমূর্ততায় একটি ‘কিমাকার ডায়নামো’। বিস্ফোরক না হয়ে র‍্যাবো স্ফুরন ঘটেছে বাংলা কবিতায়ই। এটা সম্ভব হয়েছিল ভাষা স্থির দৃশ্যেরও প্রতীকের গোলাম বলে, বিমূর্ততায় গোলাপ বলে? একুশে বইমেলায় কবিতার বইগুলো কেন থাকবে, এটা নিয়ে কবিদের বোঝাপড়া কি তা হলো, জানার বিবেক বুদ্ধি, জানানোর নয়। চেখবের নাটকের সংলাপে চেখব সিনেমার তাপদায়ক হিসেবে দেখা দিয়েছে, কিন্তু নাট্যকার ছাড়াও কি তার তরপদী সাহিত্যে তাকে নিপুণ বলতে নারাজ থাকাটাও দীন দিনহীনের জাজ? বনলতা সেন ছিল ট্র‍্যাপ বা উপলব্ধি। জীবনানন্দ যেখানে আস্ত একটা স্টীমার নিয়া কিছু করল না। হুমায়ূন আজাদ সেখানে বলেছে, “অলৌকিক ইষ্টিমার”৷ সেপারেশন টা এখানে করতেন তাহলে বুঝতাম একটা আধুনিক কবিতার বই কিনেছেন বা বিমূর্ততায় দেউলিয়া হয়েছেন। সূর্যমুখী হলিফুল আপনার কাছে। ভ্যানগগের কাছে কি একটা লতাপাতা ঝোলানো চারা ছিল? শিউলি ফুল যতটা চায়, ঘাসফুল তার চে অনেক বেশি চায়!! চিপচিপে সুরু তৃণের ভিতর যখন জীবনানন্দ বিষয়ক নিড় রচনা হতো, তখন অলৌকিক ইস্টিমার দ্যাখেন নি? সসার সে না বানাতে পারলেও জীবনানন্দ দাশ কে মিস্ত্রি ঠিকই বানাতে পেরেছিল। তার সময়ে কবি জীবনানন্দ দাশ চুতার ছিল। কিন্তু অত্যাধুনিক সাহিত্যে জীবনানন্দ দাশ রাডারিক একজন ‘নি’।। কিন্তু প্রিয়াম ততক্ষণ পর্যন্ত আগুনের উচ্ছতা পেতে পারে না, যতক্ষণ না ঘোড়ায় চড়ে।। আস্ক দ্য হোর্সেস ইন দি ডেইস অফ ব্যাটেল ইফ আওয়ার সাইনস আর আন নোউন টু ইউ।

 

(ঘ)

“the blue was more distant than the sky, beyond all depths, covering the bounds of the world.” অর্থাৎ কাউকে নিয়ে কবিতা লেখা যায় না। তার চেয়েও গুরতর প্রত্যাবর্তন নিয়ে লেখা হয়। তখনি তা হতে পারে পাঠযোগ্য। প্রকৃতই কবিতা নিয়ম করে লেখা যায় না। আর প্রায়ই সবি নিয়ম করে লেখা যায়। তাই কবিতার ও। ভবিষ্যতের দিকে তাঁকালে বলা যায়, কবিতার বই তখনি প্রকাশিত হওয়া বাঞ্চনীয় যখন তা সদা বই হিসেবে প্রস্তুত। ভবিষ্যতে নয় বর্তমান দর্পের সাথে শিল্প নিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানাতে পারে, বিশ্বের এমন দেশ সমূহে কবিতার বই যখন, তা তখনই প্রকাশিত হয়। নিদ্রিষ্ট কোন সাফল্যের যুগে কবিরা অপেক্ষা করেন না। কিন্তু বহির্বিশ্ব সম্পর্কে না জানা, অথবা জানতে না চাওয়ার নানান রকম অবস্থা, কবিদের এভাবে অপেক্ষা করিয়ে রাখে। একটা প্রশ্ন হতে পারে, জীবনানন্দ দাশের কবিতায় মানব মননের ট্রমার প্রায় সর্বোপরি প্রচ্ছন্ন মানব উপস্থিত হয়েছে। যার ফলাফল বনলতা সেন। কিন্তু তখনো রবীন্দ্রনাথের কবিতায় রবীন্দ্রনাথ বা রবীন্দ্র অনুসারীরা চিন্তার ট্রমাকে অস্বীকার করতো! কিন্তু কবিতায় যা অনিভার্য ভাবে এসেছে, সময় যাকে পথচারী করে নিল, সেই বিবিধ ঐন্দ্রজালিক ট্রমাটিক অবস্থা কবি শক্তি হিসেবে নতুনতর ধারণা না দিবে কেন? কবিকে কি শুধুমাত্র ঔষধিপতি হতে হবে? দেয়ার ইজ এ পাইথন ইন দ্যা সিটি। দ্যাটস নিড টু মুভ। ইউ যাষ্ট ক্যন্ট কিল ইট। এক্সেক্ট আদার কাইন্ড অফ কিলিং!

 

(ঙ)

হৃদয়ে সৌন্দর্য নেই অন্য ঐশ্বর্য আছে’। যখন শেষবার পড়েছিলাম, ‘টাইগার টাইগার বার্নিং ব্রাইট’। উৎসুকভাবে মূলত তাঁকিয়েছিলাম, তিরতির করে জ্বলতে থাকা ‘বার্নিং ব্রাইট’। টাইগার ফেস নিয়ে কবির পোট্রেটাইজেশন করে বলে যাওয়া। বর্ণনাশৈলী শুরুতেই স্কুল পাল্টে নিয়েছে। ভ্যিজুয়্যাল দরকার হয়েছে। তাই প্রকট হয়েছিল কবিতার ভাষায়। ‘টাইগার টাইগার বার্নিং ব্রাইট’। তখন পাঠক নিজেকে সর্বশেষ বাঘ মনে করেই বুঝতে পারছেন, জ্বলতে থাকা আগুন রেশমের মতো বাঘের চিত্রল রেখা ধরে, দেখা বার্নিং ব্রাইট। বহুল আলোচিত এই চিত্রউপম কবিতায় গতিশীল প্রাণের স্পন্দন এর খোঁজ এ পৌছুতে চেয়ে, পাঠক শুরুতেই যেটা হারিয়ে বসে তা হলো, বাঘের পোট্রেট। কবিতা তো অনেকেই পড়ে। কিন্তু পোট্রেট টা সঠিকভাবে হ্যাং আপ করতে হবে। না হলে, কারুকার্য নিয়ে একটা যতিচিহ্ন বাদ পড়ে! প্রায় ভোর। যা কিছু উপত্যকার মতো এখন জলাশ্রয়ী হীরকে আবৃত হচ্ছে। দূরত্বের উপমাগুলো যেন বাঁক না হারিয়ে ফেলে। তাই বুনো প্রাণী নিয়ে কবিতা। এমিন কি বুনো প্রাণীই।তিমির সৌন্দর্যের ভয়ানক অভিঘাতে কবি বুঝতে পেরেছিলেন, বাঘের পোট্রেটাইজেশন এর রেখাচিত্র কি রকম অবস্থায় যেতে পারে। বিশ্ব সাহিত্যের তুলনামূলক উপযোগিতা; শুরুতেই বোঝাতে পেরেছেন, কে এই কবি!

 

(চ)

কবিতায় প্রোডাকটিভিটি নিয়ে বলি:

”বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে” সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর লেখা সবচেয়ে সুন্দর উপমার মধ্যে একটি। অত্যন্ত মার্জিত ভাষায় প্রোডাক্টিভিটি নিয়ে তারপর আর কেউ লেখে নি। একই উপমায় (বিদ্রোহী) কাজী নজরুল ইসলাম ছিল টেনেটুনে পাশ! হুমায়ূন আজাদ করেছিল নির্ঘাৎ উৎপাত! তার কন্যাকে নিয়ে লেখায়। পিতার পরিচয় ভুলে যদি এতটা ভাষাজ্ঞানী হওয়া যেতো! তাহলে আর ভাষাবিজ্ঞান নিয়ে হুমায়ূন আজাদ এর ‘নোসপিন’ বলে কিচ্ছু থাকে না। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর এই ছোট্ট উপমা একটা বাক্যবিন্যাসে আনার উদাহারণ সম্ভবতঃ বাংলা কবিতায় আর নেই!

“Its really doesn’t matters how an artist exist the planet. Its the Art that matters. Its what we do for cri-sake. Jim was an artist. He wants you to listen to the words, to take the words into your depths. Into those deep places.Those secret places. Those parts of your eternal makeup where the vulnerable child lives. The terrified one. The frightened one. We’re all in the same boat. We all have the same internal makeup. And we all are frightened. But art is salvation. We become the creator’s. We are the inventors. And the joy. And the escape. And the great leap of our selves—out of the closed circle we constantly occupy—out of the shell and armor of our ego, outward into a cleaner, purer realm,, as jim once said, ‘that is our proper destination.To become enlightened creators. Knowing the oneness of all things. The devine and etternal one. And then daring to snatch duality out of that oneness. Making the choice to creat. Making the choise to exist. We all are creator and this existence is our creation. It belongs to us and we are responsible the whole damned thing! Thats art. For me, that’s what making music is all about. Plucking the notes out of the void. And for jim it was about plucking the words out of ether. Then placing them in an imaginative juxtaposition. Images. Deep & penentrating. Confessional. Sometimes mundane, often profound. Never without meaning. And usually a multilayered meaning. I used to love to listen his words. What depth and what phrase turning. A word man, indeed.

o great creator of being, grant us one more hour/ to perform our art & perfect our lives.” ~Ray Manzarek / my life with the doors

‘ধরেছি রহস্যাবৃত মহাকাল’ কবি রাজীব আশরাফ এর স্বরচিত কাব্যগ্রন্থ সম্পর্কে চেয়েছিলাম বিশেষ কিছু বলি, পারছি না কারণ আমি এখন আমার ব্যক্তিগত লাইব্রেরী থেকে দূরে। চাইলেও যেতে পারছি না। একই কারণে অনেকের প্রসঙ্গ তোলা আছে। তবুও ‘হোক কলরব’ খ্যাত এই মিষ্টিক পোয়েট’কে নিয়ে সামান্য বলতেই হবে, কারণ ছিল অত্যন্ত সুক্ষ্ম। এই চলতি সময়ে শিশু কিশোরদের বিদ্যামুখী হতে গিয়ে কতটা ক্লীবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তা বয়ান করে আন্তর্জাতিক মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। শিশুস্বরে লেখা অত্যন্ত কঠিন। এছাড়াও অত্যন্ত চমৎকার কিছু কবিতা আছে তা নিয়ে বলবো অন্য কোথাও অন্য কোনখানে। কিন্তু কেন বলবো বা বলবো না? কারণ এই কাজটা এর আগে কেউ করেন নাই। বরিস পাস্তারনক নাও পারতেন যেহেতু করেন নি।

একজন পিরামিড যুগের কবি। যাকে ইনক্লুড না করলে পরবর্তী অধ্যায় শুরু করার যুক্তিকতা থাকবে না। তিনি গ্যাব্রিয়েল সুমন। তার যে বইটা আমি পড়ি নাই৷ বইয়ের নাম নিয়ে বলতে চাই। ‘ফ্লপ অডিয়েন্স’। এই জন্য যে এমন অনেক শূন্যতা বা এম্পটি স্পেস আছে যা টোটালি কেউ টাচ করে না সে সমস্ত ক্ষেত্রে গ্যাব্রিয়েল সুমন এর লেখাপত্র আছে। আপনাকে যদি একটা ফুলের অর্গান ছিঁড়ে দেই তাহলে ফুল সম্পর্কে আপনি কচু বলতে পারবেন। গ্যাব্রিয়েল এর বই ওরকম। ছেঁড়া অর্গানিক লেখা পড়তে হলে আপনার ধরে আরও একটা মাথা থাকতে হবে। চলতি অধ্যায় শেষ করার আগে কবি সাইয়্যেদ জামিল এর রেহেল কবিতাটা নিয়ে বলতে চাই। কারণ ঐ ছোট্ট কবিতাটা খুব ভাসমান। এই কবিতা লিখতে তাকে অনেক কবিতা লিখতে হয়েছে। আমার পড়া এরকম কয়েকশো বাংলা কবিতা আছে যা বিশ্ব কবিতার বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে। সে সম্পর্কে জানতে পরবর্তী সুযোগ আমাকে তৈরি করে দিতে হবে আপনার।

Related posts